প্রকাশিত: Sat, Apr 6, 2024 12:51 PM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 11:41 PM

[১]রোহিঙ্গাদের ফেরাতে জাতিসংঘের জরুরী পদক্ষেপ চেয়েছে বাংলাদেশ

খুররম জামান: [২] জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা সংকট আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। এরই মাঝে রাখাইন রাজ্যে পুনরায় শুরু হওয়া সশস্ত্র সংঘাত এ এলাকার রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে নতুন করে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।

[৩] রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর, বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর এর প্রভাব নিয়ে বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদে আয়োজিত এক উন্মুক্ত বৈঠকে এ কথা বলেন মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। 

[৪] জাতিসংঘে বাংলাদেশের  স্থায়ী মিশন থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করেন জাতিসংঘের রাজনৈতিক এবং শান্তি বিনির্মাণ বিষয়ক সহকারী মহাসচিব খালিদ খিয়ারি এবং মানবিক সহায়তা সমন্বয় অফিসের পরিচালক লিসা ডাউটন। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ছাড়াও সভায় মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। 

[৫] রাষ্ট্রদূত মুহিত তার বক্তব্যে বলেন, রাখাইনে সাম্প্রতিককালে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াও ব্যহত হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলেই আবার এ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় তিনি প্রত্যাবাসন ইস্যুতে প্রকৃত রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন এবং ২০১৭ ও ২০১৮ সালে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক প্রত্যাবর্তন চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সাথে কাজ করার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান। 

[৬] এছাড়াও, রাখাইনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার এবং ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তনকারীদের রাখাইনে সফলভাবে পুনর্বাসনে সহায়তা করার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে আঞ্চলিক সংস্থাসমূহ এবং আঞ্চলিক ও প্রতিবেশী দেশও লোকে অর্থপূর্ণ এবং কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার অনুরোধ জানান। 

[৭] জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলেশন ২৬৬৯ এর কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, রাখাইনে একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণগুলি মোকাবেলা করা জরুরী যা মূলত মিয়ানমারের বিদ্যমান বৈষম্যমূলক আইনি ও রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যে অন্তর্নিহিত। এই অন্তর্নিহিত সমস্যাসমূহের সমাধান করা না গেলে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক প্রচেষ্টাসমূহের সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

[৮] রাষ্ট্রদূত মুহিত মিয়ানমারে জাতিসংঘের উপস্থিতি জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা এবং নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলেশন ২৬৬৯ বাস্তবায়নের বিষয়ে নিয়মিত রিপোর্টিং, রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং রাখাইনে সংকট সমাধানে বিভিন্ন সময়ে গৃহিত চুক্তি ও সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে জোর দেন। 

[৯] তিনি মিয়ানমারের অন্য সকল জাতিগোষ্ঠির মত রোহিঙ্গারাও যেন সমাজে সমান মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সে লক্ষ্যে উপযুক্ত এবং টেকসই পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের যথাযথ ভূমিকার ওপর জোর দেন। রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির কারণে বাংলাদেশ যে নেতিবাচক সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং নিরাপত্তা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে-  রাষ্ট্রদূত মুহিত তা তুলে ধরেন। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব